এক দিনে পূর্ব বর্ধমানে করোনা পজিটিভ ১০ জন ! সতর্কতা জেলা জুড়ে

25th May 2020 বর্ধমান
এক দিনে পূর্ব বর্ধমানে করোনা পজিটিভ ১০ জন ! সতর্কতা জেলা জুড়ে


বাবু সিদ্ধান্ত ( বর্ধমান ) : পূর্ব বর্ধমানে  বাড়ছে করোনা আক্রান্তের  সংখ্যা । গত ২৪  ঘন্টায়  জেলার ১০ জনের করোনা পজিটিভ ধরা পড়ার  রিপোর্ট প্রকাশ্যে এসেছে । এই নিয়ে জেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৩৫ ছুঁইছুঁই । করোনা আক্রান্তের সংখ্যা এভাবে হুহু করে বেড়ে চলায় চুড়ান্ত উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন জেলার বাসিন্দারা ।

প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দপ্ত সূত্রে জানা গিয়েছে ,গত ২৪ ঘন্টায় যাদের করোনা পজিটিভ রিপোর্ট এসেছে তাঁদের বেশিরভাগ জনই পরিযায়ী শ্রমিক । মেমারি ২ ব্লকের ঝিকড়া এলাকা নিবাসী যে যুবকের করোনা পজিটিভ ধরা পড়েছে । সে দিল্লিতে শ্রমিকের কাজ করতো । কয়েকদিন আগে সে মেমারি ফেরে । তাঁকে মেমারি ২ ব্লকের সাতগেছিয়ার একটি কোয়রান্টিন সেন্টারেরা রাখা হয় । করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট আসার আগেই  রবিবার রাতে ওই যুবক সহ কোয়রান্টিনে থাকা সব পরিযায়ীকে ছেড়ে দেওয়া হয়।এদিন  দিল্লি ফেরৎ ওই যুবকের করোনা পজিটিভ রিপোর্ট আসে । যুবককে এদিনই পাঠানো হয়েছে দুর্গাপুরে কোভিড হাসপাতালে ।পরিবার সদস্য সহ আরও কারা কারা যুবকের সংস্পর্শে এসেছিল তাঁদের  চিহ্নিত করার কাজ শুরু করেছে প্রশাসন ।এদিন বিকেলে ফের  মেমারি ২ ব্লকে বড়পলাশন ২ পঞ্চায়েত এলাকার  এক যুবকের করোনা পজিটিভ রিপোর্ট এসেছে। এই যুবকও পরিযায়ী শ্রমিক । সে মুম্বইয়ে অলংকার তৈরির প্রতিষ্ঠানে কাজ করতো ।সেখান থেকে  রবিবার দুপুরে সে ফিরেছে  
ওই দিনই বর্ধমানে লালারসের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষায় পাঠানো হয়েছিল  ।একই দিনে  মধ্যপ্রদেশ থেকে বর্ধমানের ফিরেছিলেন  বর্ধমানের সদরঘাট এলাকা নিবাসী এক ব্যক্তি । তিনি সেখানকার একটি সংস্থায় কাজ করতেন ।রবিবার রাতে তাঁরও রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে । অনেক নকানি চোবানি খেয়ে ওই ব্যক্তিকে খুঁজে বের করে এদিন দুর্গাপুরের কোডিড হাসপাতালে পাঠানো হয় । 

এরা ছাড়াও গলসির বিক্রমপুর এলাকার 
বাড়িতে ফিরে আসা এক পরিযায়ী শ্রমিকেরও  করোনা আক্রান্ত হবার রিপোর্ট এসেছে । ওই আক্রান্ত ব্যক্তি কর্মসূত্রে মুম্বাইয়ে থাকতেন । কয়েকদিন আগে তিনি সহ জনা ১৪ পরিযায়ী ট্রেনে চড়ে মুম্বাই থেকে  বর্ধমানে ফেরেন । গলসির আক্রান্ত ব্যক্তি ভাতারের কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে ছিলেন । করোনা রিপোর্ট আসার আগেই কোয়ারেন্টাইন সেন্টার থেকে ছেড়ে দেওয়া হলে তিনি গলসির বাড়িতে চলে আসেন । এদিন তাঁরও রিপোর্ট পজিটিভ আসে । রায়না ১ ব্লকের দুই পরিযায়ী শ্রমিকের করোনা পজিটিভ রিপোর্ট এসেছে । আক্রান্তরা রায়নার সেহারাবাজার পঞ্চায়েতের খেমতা ও শ্যামসুন্দর পঞ্চায়েতের  মাদানগর এলাকার বাসিন্দা। কয়েকদিন আগে দুজনেই মহারাষ্ট্র থেকে ফেরে । ওই দিনই  তাঁদের লালা রসের নমুনা সংগ্রহ করে পাঠানো হয় ।এদিন তাঁদের দুজনেরই রিপোর্ট  পজিটিভ এসেছে ।একই ভাবে এদিনই জেলার জামালপুর ব্লকের এক জনের করোনা পজিটভ  ধরা পড়েছে । আক্রান্ত বছর ৩৭ বয়সী ব্যক্তির বাড়ি জামালপুরের জৌগ্রাম পঞ্চায়েতের তুরুক ময়না এলাকার  বাসিন্দা । 
মুম্বাইয়ের একটি অলংকার প্রতিষ্ঠানে তিনি কাজ করতেন । সেখান থেকে ১৬ মে তিনি বর্ধমানে  ফেরেন । রালা রসের নমুনা সংগ্রহ করে তাঁকে মাধবডিহির কোয়ারেন্টাই সেন্টারে  রাখা হয়  । রিপোর্ট আসার আগে রবিবার তাকে সেখান থেকে ছেড়ে দেওয়া হয় । যুবক বাড়ি ফিরে আসার পর এদিনই তাঁর  রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। আউশগ্রাম ২ ব্লকের ভেদিয়া পঞ্চায়েত এলাকা নিবাসী এক পরিযায়ী শ্রমিকেরও করোনা পজিটিভ ধরা পড়েছে । ওই পরিযায়ী শ্রমিক গত ১৮ মে    চেন্নাই থেকে বর্ধমানে ফিরেছিলেন । এই সকল আক্রান্তরা  এছাড়াও বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন  এক মহিলার করোনা পজিটিভ ধরা পড়েছে। তিনি পশ্চিম বর্ধমানের বারাবনি এলাকার বাসিন্দা ।আসানসোল হাসপাতালে গত বুধবার গর্ভপাত হওয়ার পর মহিলাকে শনিবার বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ  হাসপাতালে স্থানান্তর  হয়। উপসর্গ দেখে রবিবার সকালে তাঁর  লালারসের নমুনা নিয়ে পরীক্ষায় পাঠানো হয় । মহিলার করোনা পজিটিভ  ধরা পড়ার রিপোর্ট এদিন আসে। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ সুহৃতা পাল জানিয়েছেন , “আক্রান্ত মহিলার প্রত্যক্ষ সংস্পর্শে আসায় ১১ জন চিকিৎসক-নার্সকে কোয়ারেন্টাইনে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।এছাড়াও হাসপাতালের ওয়ার্ড স্যানিটাইজ়েশন করা হয়েছে।”এদিন রাতে পাওয়া খবরে জানাগেছে পূর্বস্থলী ১ ব্লকের জাহান্নগর পঞ্চায়েত এলাকার এক পরিযায়ী  
শ্রমিকেরও করোনা পজিটিভ ধরা পড়েছে । চারদিন আগে তিনি মুম্বাই থেকে ফিরেছিলেন বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন ।  জেলাশাসক বিজয় ভারতি এদিন বলেন  লালা রসের নমুনা সংগ্রহ বাড়ানো হয়েছে । সিএমওএইচ প্রণব রায় জানিয়েছেন , রবিবার রাত থেকে এদিন  দুপুর পর্যন্ত জেলার পাঁচ জনের রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে । এছাড়াও বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা এক মহিলার রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে ।





Others News

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা


প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ( বর্ধমান ) : প্রায় এক বছর আগে আবেদন করেও মেয়ের জাতিগত শংসাপত্র মেলেনি । আবেদনকারীদের জাতি শংসাপত্র দেওয়ার
ক্ষেত্রে দেরি করা যাবেনা বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।কিন্তু বাস্তবে ঠিক তার উল্টোটাই ঘটে চলেছে।প্রায় এক বছর আগে  চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে  আবেদন করেছিলেন মা।কিন্তু মেয়ে কে পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসলেও জাতি  শংসাপত্র আজও না মেলায় কার্যত হতাশ হয়ে পড়েছেন পূর্ব বর্ধমানের মেমারির রাধাকান্তপুর নিবাসী ঊর্মিলা দাস।ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য ঊর্মিলাদেবী বৃহস্পতি বার মেমারি ১ ব্লক বিডিও অফিসে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন। শংসাপত্র পাবার জন্য বিডিও সাহেব কি ব্যবস্থা করেন সেদিকেই এখন তাকিয়ে ঊর্মিলাদেবী। 

বিডিওকে লিখিত আবেদনে ঊর্মিলাদেবী জানিয়েছেন ,তাঁর স্বামী মানিক দাস দৃষ্টিহীন প্রতিবন্ধী ।বছর ১০ বয়সী তাঁদের একমাত্র কন্যা গ্রামের বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত কালে তাঁর ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য তিনি নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারী আবেদন করেছিলেন।  উর্মিলাদেবী বলেন ,তার পর থেকে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে  গেলেও তিনি তাঁর মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পান না।মেয়ের পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসায় গত অক্টোবর মাসের শেষের দিকে তিনি শংসাপত্রের বিষয়ে মেমারি ১ ব্লকের বিডিও অফিসে খোঁজ নিতে যান।জাতি শংসাপত্র বিষয়ের বায়িত্বে থাকা বিডিও অফিসের আধিকারিক তাঁকে অনলাইনে এই সংক্রান্ত একটি নথি বের করে আনতে বলেন । অনলাইনে সেই নথি বের করেনিয়ে তিনি ফের ওই আধিকারিকের কাছে যান । তা দেখার পর ওই আধিকারিক তাঁকে  ২০ দিন বাদে আসতে বলেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন , তিনি ২৫ দিন বাদে যাবার পর ওই আধিকারিক তাঁকে গোপগন্তার ২ গ্রাম পঞ্চায়েতে গিয়ে খোঁজ নেবার কথা বলেন । তিনি এরপর গ্রামপঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যান । নথি ঘেঁটে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে কোন ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি।ঊর্মিলাদেবী দাবী করেন ,এই ভাবে তিনি একবার বিডিও অফিস , আবার পঞ্চায়েত অফিসে দরবার করে চলেন । কিন্তু তাতে কাজের কাজ কিছু হয় না। মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য  গত ১৩ ডিসেম্বর ফের তিনি বিডিও অফিসে যান ।ওই দিনও বিডিও অফিসের জাতি শংসাপত্র বিষয়ক বিভাগের আধিকারিক তাঁকে একই ভাবে পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যেতে বলে দায় সারেন। পরদিন তিনি পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে গেলে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ ফের জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে  ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি । কেন মেয়ের জাতি শংসাপত্র পাচ্ছেন না সেই বিষয়ে  না পঞ্চায়েত না ব্লক প্রশাসনের কর্তৃপক্ষ কেউই তাঁকে কিছু জানাতে পারেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন ,পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তির আগে তার মেয়ে যাতে ওবিসি শংসাপত্র পেয়ে যায় তার ব্যবস্থা করার জন্য এদিন তিনি বিডিওর কাছে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন । মেমারী ১ ব্লকের বিডিও আলী মহম্মদ ওলি উল্লাহ এদিন বলেন ,“জাতি শংসাপত্র পাবার জন্য হাজার হাজার আবেদন জমা পড়ছে । তবে ঊর্মিলাদেবীর কন্যা দ্রুত যাতে বিবিসি শংসাপত্র দ্রুথ পান সেই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে “। মেমারির বিধায়ক মধুসূদন ভট্টাচার্য্য বলেন,’মেমারি  বিধানসভা এলাকার আবেদনকারীরা দ্রুত যাতে জাতি শংসাপত্র পান সেই বিষয়ে প্রশাসনকে আরও তৎপর হওয়ার কথা বলবো’।